আট মাস ধরে হাসপাতালটিতে নেই এক্সরে ও সিটি স্ক্যান ফিল্ম

পাবনা জেনারেল হাসপাতালে প্রায় আট মাস ধরে নেই এক্সরে ও সিটি স্ক্যান মেশিনের ফিল্ম। এতে প্রতিদিন সরকারি সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন হাজারো রোগী। হাসপাতালেই ২০০ টাকায় এক্সরে করার সুযোগ থাকলেও ফিল্ম সংকটের কারণে রোগীদের বাধ্য হয়ে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা খরচ করে বেসরকারি ক্লিনিকে এক্সরে করাতে হচ্ছে।
সাধারণ মানুষের জন্য স্বল্প খরচে উন্নত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে ২৫০ শয্যার পাবনা জেনারেল হাসপাতালে স্থাপন করা হয়েছিল অত্যাধুনিক সিটি স্ক্যান মেশিন, এক্সরে মেশিন ও ইসিজি মেশিনসহ উন্নত যন্ত্রপাতি। তবে প্রায়ই এসব মেশিন বিকল হয়ে পড়ে। বর্তমানে ফিল্ম সংকটের কারণে প্রায় আট মাস ধরে ইসিজি ও এক্সরে মেশিন কার্যত বন্ধ।
সরকারি হাসপাতালের এসব মেশিন অকার্যকর থাকায় রোগী ও স্বজনরা বাধ্য হয়ে বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দ্বারস্থ হচ্ছেন। এতে দালালদের খপ্পরে পড়ে অতিরিক্ত টাকা খরচ করতে হচ্ছে রোগীদের। দ্রুত সরকারি হাসপাতালে ইসিজি ও সিটি স্ক্যান মেশিন সচল করার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
রফিকুল ইসলাম নামের এক রোগী বলেন, ‘আমরা কৃষক মানুষ, কাজ করে কত টাকাই বা পাই? সরকারি হাসপাতালে স্বল্পমূল্যে চিকিৎসা পাওয়ার আশায় আসি, কিন্তু এখানে সেবা না পেলে কোথায় যাব? ডাক্তার এক্সরে করতে বলেছেন, কিন্তু হাসপাতালে এক্সরে মেশিন বন্ধ। এখন বেসরকারি ক্লিনিকে গিয়ে এক্সরে করাতে হবে, এত টাকা কোথায় পাব?’
আরেক ভুক্তভোগী সিরাজ উদ্দীন সরদার বলেন, ‘পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সেবার মান খুবই খারাপ। একদিকে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, অন্যদিকে এক্সরে ও সিটি স্ক্যান মেশিন বিকল। সাধারণ মানুষ হাসপাতালে প্রত্যাশিত সেবা পাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে বেসরকারি ক্লিনিকে গিয়ে দালালদের ফাঁদে পড়ে অতিরিক্ত টাকা গুনতে হচ্ছে। দ্রুত কর্তৃপক্ষের নজরদারি দরকার।’
এ বিষয়ে ২৫০ শয্যার পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এই হাসপাতালে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রোগীরা আসেন। আমাদের যে পরিমাণ ফিল্ম বরাদ্দ থাকে, তার তুলনায় রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। ফলে ছয় মাসের ফিল্ম দুই মাসেই শেষ হয়ে যায়। তবে আমাদের সব মেশিন সচল রয়েছে। এখানে মোট তিনটি এক্সরে মেশিন রয়েছে, যার মধ্যে দুটি ডিজিটাল ও একটি এনালগ। প্রতিদিন অন্তত ৭০ থেকে ৮০টি ফিল্ম প্রয়োজন হয়। অন্যদিকে, একটি সিটি স্ক্যান মেশিনও রয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমাদের সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি, শিগগিরই সমাধান হবে।’