কর্মচারীদের কর্মবিরতিতে বিঘ্নিত রোগীর সেবা

ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগকৃত কর্মচারীদের বেতন বন্ধ রয়েছে ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে। বকেয়া পরিশোধের দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন তারা। কয়েক দিনের কর্মবিরতির কারণে হাসপাতালে বিঘ্নিত হচ্ছে রোগীর সেবা। পরিচ্ছন্নতাসহ ছোটখাটো কাজগুলো বন্ধ রয়েছে। বিশেষ করে হাসপাতাল পরিচ্ছন্নতায় এক ধরনের স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। দ্রুত সমস্যা সমাধান না হলে ভোগান্তি আরো বাড়বে বলে মনে করেন রোগী ও তাদের স্বজনরা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ৫৩ জন কর্মচারী আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এসব কর্মচারীর মাঝে ডোম ও ডোম সহকারী, ওয়ার্ড বয়, পরিচ্ছন্নতা কর্মী, বাবুর্চি সহকারী, আয়া, মালি, দারোয়ান রয়েছেন। প্রতি মাসে ঠিকাদারের মাধ্যমে তারা ১৫ হাজার টাকা হারে বেতন পাওয়ার কথা। তবে অভিযোগ রয়েছে হাসপাতালের কয়েকজন কর্মকর্তার যোগসাজশে ৮ হাজার টাকা বেতন দেয়া হয় তাদের। সে টাকাও ছয় মাস ধরে দেয়া হচ্ছে না।
যমুনা রানী দাস নামে এক কর্মচারী বলেন, জুনের পর আর কোনো বেতন পাইনি। নতুন বছর এসেছে, টাকার জন্য ছেলেটাকে এখনো স্কুলে ভর্তি করাতে পারিনি। পাঁচ মাসের বাসা ভাড়া বকেয়া পড়েছে। মানবেতর জীবনযাপন করছি। এভাবে কতদিন কাজ করা যাবে?’
হাসপাতালে ২২ বছর ধরে কাজ করেন রিনা আক্তার। তিনি বলেন, ‘আগস্টে বন্যার সময় বাসাবাড়ি পানির নিচে তলিয়ে যায়। হাসপাতাল থেকে বাসায় গিয়ে আর কিছুই রক্ষা করতে পারিনি। বেতন না পাওয়ায় বাসায় আসবাবপত্র নিতে পারিনি। শীতের কাপড় পর্যন্ত কিনতে পারলাম না। অনেক দিন ধরে অসুস্থ। বেতনও পাচ্ছি না। তার পরও হাসপাতালে ক্লিনারের কাজ করে যাচ্ছি।’
হাসপাতালের ডোম আবদুর রহীম বলেন, ‘৩৬ বছর ধরে হাসপাতালে ডোমের কাজ করছি। আমরা কাজ করে খেতে চাই। আমাদের নামে ১৫ হাজার টাকা করে বেতন হয়। কিন্তু আমাদের ৮ হাজার টাকা দেয়া হয়। তাও আবার ছয় মাস বন্ধ। বেতন পাব কিনা তা কেউ নিশ্চিত বলতেও পারছে না। আমরা পূর্ণাঙ্গ বেতন-ভাতা নিয়মিত না পেলে কীভাবে কাজ করব?’
এ ব্যাপারে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক (উপপরিচালক) আবুল খায়ের মিয়াজী বণিক বার্তাকে বলেন, ‘হাসপাতালে বর্তমানে আউটসোর্সিংয়ে কর্মরত ৫৩ জন কর্মচারীর বেতন-ভাতা ছয় মাস বন্ধ রয়েছে। এ নিয়ে তাদের মাঝে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। জটিলতা নিরসনে আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।’