নিউমোনিয়া বাড়লেও শিশুদের জন্য আইসিইউ নেই খুলনা মেডিকেলে
বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় শীত মৌসুমে শিশুরা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয় বেশি। এ রোগে আক্রান্ত মুমূর্ষু শিশুদের সাধারণত পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (পিআইসিইউ) রেখে চিকিৎসা করা হয়, যেটিকে বলা হয় শিশুদের আইসিইউ। তবে ১৯৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (খুমেক) শিশু ওয়ার্ডে স্থাপন করা হয়নি অত্যাবশ্যকীয় এ ইউনিট। বাধ্য হয়ে চিকিৎসকরা রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্যত্র পাঠাচ্ছেন। দেশের বিভাগীয় শহরের সরকারি হাসপাতালগুলোয় শিশু ওয়ার্ডের জন্য অবশ্যই আইসিইউ বাড়ানো উচিত বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
চিকিৎসকরা বলছেন, অন্য সময়ের তুলনায় শীত মৌসুমে শিশুদের নিউমোনিয়া বেশি দেখা দেয়। দেশে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ নিউমোনিয়া। আইসিডিডিআর, বির তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ২৪ হাজার শিশু নিউমোনিয়ায় মারা যায়। হাসপাতালে ভর্তি হয় অন্তত ৬ লাখ ৭৭ হাজার।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৯ সালে খুলনার বয়রায় প্রতিষ্ঠিত হয় ২৫০ শয্যার খুলনা হাসপাতাল, যা ১৯৯২ সালে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রূপান্তর হয়। ২০০৮ সালে ৫০০ শয্যায় উন্নীত হওয়া হাসপাতালটির ১৬টি বিভাগে ৩১টি ওয়ার্ড রয়েছে। উন্নত চিকিৎসার আশায় খুলনা বিভাগের ১০ জেলাসহ গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, ফরিদপুর, পিরোজপুর, ঝালকাঠিসহ আশপাশের জেলা থেকেও রোগীরা আসে। ৫০০ শয্যার হাসপাতালটিতে প্রতিদিন রোগী ভর্তি থাকছে তিন গুণেরও বেশি। বহির্বিভাগেও রয়েছে রোগীর চাপ।
তবে চিকিৎসক ছাড়াও নার্স, থেরাপিস্ট, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীর ৫৩টি পদ শূন্য রয়েছে হাসপাতালটিতে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন দূর-দূরান্ত থেকে আসা সেবাপ্রত্যাশীরা।
রোগীরা বলছেন, হাসপাতালের অভ্যন্তর ময়লা ও মেডিকেল বর্জ্যের ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। ময়লার কারণে অস্বস্তিকর পরিবেশ তৈরি হচ্ছে গোটা হাসপাতালজুড়ে। দুর্গন্ধে নাক চেপে চলাচল করছেন সবাই।
খুলনার সিভিল সার্জন ডা. শেখ সফিকুল ইসলাম জানান, মৌসুমের শুরু থেকেই এবার হাসপাতালগুলোয় শীতজনিত রোগে আক্রান্তের চাপ বেড়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধরা। শীতজনিত রোগ মোকাবেলায় চিকিৎসকরা নির্দেশনা অনুযায়ী সেবা দেয়ার চেষ্টা করছেন।