Space for ads

ভাইরাসজনিত রোগ প্রতিরোধে শিশুর বিশেষ যত্ন

 প্রকাশ: ২২ অক্টোবর ২০২৪, ০১:০১ অপরাহ্ন   |   চিকিৎসা

ভাইরাসজনিত রোগ প্রতিরোধে শিশুর বিশেষ যত্ন
Space for ads
সাম্প্রতিক সময়ে শিশুদের মধ্যে ভাইরাসজনিত সংক্রামক রোগ বেড়েই চলেছে। এসব রোগ প্রতিরোধে সচেতনতার পাশাপাশি সঠিক সময়ে চিকিৎসা প্রয়োজন।

উপসর্গ
ভাইরাস দিয়ে আক্রান্ত হওয়ার ৩-৬ দিনের মধ্যে অল্প তাপমাত্রা থেকে মধ্যম মানের (১০২ ডিগ্রি) তাপমাত্রা সহকারে জ্বর আসে। কিছু ভাইরাসের ক্ষেত্রে ভিন্নতাও থাকতে পারে।  

অনেক ক্ষেত্রে জ্বর হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গলাব্যথা শুরু হবে, খাওয়ার রুচি কমে যাবে, ক্লান্তি লাগবে, শরীর দুর্বল হয়ে যাবে, গলাব্যথার কারণে শিশু খাবার কিংবা পানি কিছুই খেতে চাইবে না। তখন পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন হতে পারে। গলাব্যথার পাশাপাশি মুখ-গহ্বরের ভেতর ছোট ছোট সাদা আকৃতির ফুসকুড়ি দেখা দেবে, ঠোঁটের আশপাশে র‌্যাশ দেখা দেবে, র‌্যাশগুলো কিছুটা ব্যথার কারণ হবে। র‌্যাশগুলোতে চুলকানিও থাকতে পারে।

জ্বর শুরু হওয়ার ২ থেকে ৩ দিনের মধ্যে হাত ও পায়েও র‌্যাশ দেখা দিতে পারে। হাত, পা ও মুখকে আক্রান্ত করতে পারে। বিশেষ করে হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজে এ রকম সমস্যা বেশি দেখা যায়।

কারণ
যেকোনো সংক্রামক ভাইরাস দিয়ে সংক্রমণ হলেই এ ধরনের সমস্যা হতে পারে। যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল, তারা ভাইরাস দিয়ে সংক্রমিত বেশি হয়।

যেভাবে ছড়ায়
ভাইরাসজনিত রোগ মূলত ফিকো-ওরাল রুট এবং নাকের পানি, থুতু ও কাশির মাধ্যমে ছড়ায়। একেক ভাইরাস একেক পথ ব্যবহার করে। ভাইরাস হাত ও পায়ের র‌্যাশগুলোর সংস্পর্শের মাধ্যমেও ছড়াতে পারে। তাই বলা যায় আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে গেলে, আক্রান্ত ব্যক্তির জামাকাপড় ব্যবহার করলে, আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত গ্লাস ব্যবহার করলে ভাইরাসজনিত রোগ হতে পারে। কারণ সেখানে স্যালাইভা থাকতে পারে এবং স্যালাইভাতে ভাইরাস থাকতে পারে। এ ছাড়া দূষিত পানির মাধ্যমে অর্থাৎ আক্রান্ত ব্যক্তির মলযুক্ত কোনো কাপড় যদি পুকুরে ধৌত করা হয় তাহলে সেই পানিতে ভাইরাস থাকবে। আবার সেই ভাইরাসসমৃদ্ধ পানি কোনোভাবে খাওয়া হলে সে ক্ষেত্রেও ভাইরাসজনিত রোগ হতে পারে।

প্রতিরোধ
খাওয়ার আগে ভালোভাবে হাত ধোয়া, বিশুদ্ধ পানি পান করা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নভাবে চলা, আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে না যাওয়ার মাধ্যমে এই রোগ প্রতিরোধ করা যায়। আবার অনেকেই ছোট শিশুদের আদর করে চুমু দিয়ে থাকেন। এতে করে শিশুরা বিভিন্ন প্রকার ভাইরাসজনিত রোগের ঝুঁকিতে থাকে। তাই এভাবে আদর করা থেকে বিরত থাকতে হবে, নিরাপদ রাখতে হবে। মা-বাবার এ ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। সেই সঙ্গে নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করা, ভিটামিন এ, ই, সি-সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। তাই এসব খাবার বেশি বেশি খেতে হবে। দুই বছর পর্যন্ত শিশুর জন্য মায়ের দুধ চলমান থাকলে এতে শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।

চিকিৎসা
সাধারণত যেকোনো ভাইরাসজনিত রোগ ৭-১০ দিনের মধ্যে ভালো হয়ে যায়। তাই শিশু যদি ঠিকমতো খাবার খেতে পারে, তাহলে তেমন একটা চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না। চিকিৎসার ক্ষেত্রে জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল, সঙ্গে চুলকানি কমানোর জন্য অ্যান্টিহিস্টামিন দেওয়া যেতে পারে। আর জ্বর না থেকে শুধু ব্যথা থাকলেও প্যারাসিটামল বা আইবুপ্রোফেন দেওয়া যেতে পারে। সঙ্গে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য সিভিট, জিঙ্ক ইত্যাদি দেওয়া যেতে পারে। তবে খেয়াল রাখতে হবে শিশু যেন পর্যাপ্ত পুষ্টি পায় এবং কোনোভাবে যেন ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা না হয়। পানিশূন্যতা দেখা দিলে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে শিরাপথে স্যালাইন দিয়ে চিকিৎসা করাতে হবে। যেকোনো সমস্যায় চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
BBS cable ad