Space for ads

পিরোজপুরে সড়কে ৮ মৃত্যু : কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে হাসপাতালের পরিবেশ

 প্রকাশ: ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:০৫ অপরাহ্ন   |   মেডিকেল কলেজ

পিরোজপুরে সড়কে ৮ মৃত্যু : কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে হাসপাতালের পরিবেশ
Space for ads
অন্য এক রকম পরিবেশ বিরাজ করছে পিরোজপুর সদর হাসপাতালে। বুধবার (৯ অক্টোবর) রাত সোয়া ২টার দিকে পিরোজপুর সদরের কদমতলা এলাকায় একটি প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খালে পড়ে দুই পরিবারের চার শিশুসহ আটজন নিহত হন। দুর্ঘটনায় নিহতদের স্বজনরা হাসপাতালে ছুটে আসেন। স্বজনদের  আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠেছে হাসপাতালের পরিবেশ।

সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালে আহাজারি করছিলেন শাওনের শাশুড়ি শেফালী বেগম। আহাজারি করতে করতে তিনি বলছেন, ওরে আমার নাতিরে আনাইয়া দে। ওরে আমার নাতি দুইটা কই, ওরে আমার বাবা দুইটা কই।

জানা যায়, পিরোজপুর সদর উপজেলার পিরোজপুর-নাজিরপুর সড়কের নূরানী গেট এলাকায় একটি প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশের খালে পড়ে দুই পরিবারের আটজন নিহত হয়েছেন।

নিহতরা হলেন-  পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার হোগলাবুনিয়া এলাকার  শাওন মৃধা(৩২), তার স্ত্রী আমেনা বেগম, ছেলে আবদুল্লা (৩) ও অপর ছেলে শাহাদাৎ (১০)। অপর পরিবারটি হচ্ছে-  শেরপুর জেলার খোলআচার পাড়ায় এলাকার মোতালেব (৪৫), তার স্ত্রী সাবিনা আক্তার (৩০), মেয়ে মুক্তা (১২) ও ছেলে সোয়াইব (২)।

রাত সোয়া ২টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা স্থানীয়দের কাছে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে এসব মরদেহ উদ্ধার করে।

শাওন মৃধার খালাতো ভাই মুরাদ মাঝি জানান, শাওন মৃধা ঢাকার ভাষানটেক এলাকার পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। গাড়ি চালিয়ে জীবন নির্বাহ করেন। তিনি কুয়াকাটা ভ্রমণ করে পরিবারসহ ঢাকা যাওয়ার পথে দুর্ঘটনায় পড়েন। ঘটনাস্থলে গাড়িতে থাকা সবাই মারা যান।

শাওন মৃধা পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলা হোগলাবুনিয়া গ্রামের মৃত আসাদ মৃধার ছোট ছেলে। তিন ভাইয়ের মধ্যে শাওন সবার ছোট। জীবিকা নির্বাহের জন্য পরিবারসহ ঢাকা বসবাস করেন। বিয়ে করেছেন বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলায়। শাওন ও মোতালেব ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তারা দুই পরিবার মিলে তিনদিন আগে কুয়াকাটা ঘুরতে গিয়েছিলেন। কুয়াকাটা থেকে ফেরার পথে এ দুর্ঘটনায় ঘটে।

মোতালেব শেরপুর জেলার সদর উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের নাজিম উদ্দিনের ছেলে। মোতালেব বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সিভিল স্টাফ হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

স্থানীয় নাজমা আকতার নামে এক নারী জানান, রাত সোয়া ২টার দিকে আমার বাড়ির সামনে হঠাৎ কোনো কিছু পড়ে যাওয়ার শব্দ পাই। আমি আর আমার ছেলে বের হয়ে খালে একটি প্রাইভেটকার দেখতে পেয়ে স্থানীয়দের মাধ্যমে ফায়ার সার্ভিস ও থানা পুলিশকে খবর দেই।

পিরোজপুর সদর হাসপাতালের আরএমও ডাক্তার নিজামুর রহমান জানান, রাত ৩টার দিকে ফায়ার সার্ভিস একটি দল হাসপাতালে আটজনের লাশ নিয়ে আসে। হাসপাতালের চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাদের মৃত ঘোষণা করেন। লাশগুলো হাসপাতালে মর্গে রাখা আছে।
BBS cable ad