মধ্যরাতেও পঙ্গু’র সামনে আন্দোলনকারীদের অবস্থান
জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (নিটোর) সামনের রাস্তায় অনড় অবস্থানে হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে আহতরা। সুচিকিৎসার দাবিতে বুধবার (১৩ অক্টোবর) দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত হাসপাতালের সামনের রাস্তার ওপর তাদের হুইল চেয়ার ছাড়াও চেয়ার পেতে ভাঙা পা নিয়ে বসে থাকতে দেখা গেছে।
আহতদের দাবি, চিকিৎসায় নানা দিক থেকে অবহেলার শিকার হচ্ছেন তারা। অন্তর্বর্তী সরকারের চারজন উপদেষ্টা এসে তাদের সঙ্গে কথা বলে সুচিকিৎসার আশ্বাস না দেওয়া পর্যন্ত তারা অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন। এ সময় দাবি আদায় না হলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারিও দেন তারা।
এর আগে একই দিন দুপুর সোয়া ১টার দিকে পঙ্গু হাসপাতালের সামনের সড়ক বন্ধ করে সেখানে অবস্থান নেন জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন আহতরা। পরে সন্ধ্যার দিকে রাত ১০টার মধ্যে স্বাস্থ্য, তথ্য, সমাজকল্যাণ ও ক্রীড়া উপদেষ্টাকে পঙ্গু হাসপাতালের সামনে উপস্থিত হওয়ার আল্টিমেটাম দেন তারা। তবে বেঁধে দেওয়া এই সময়ের মধ্যে উপদেষ্টাদের ঘটনাস্থলে দেখা যায়নি।
অন্যদিকে রাত ৮টার দিকে পঙ্গু হাসপাতালের সামনে অবস্থানরত আহতদের সঙ্গে কথা বলেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। সমস্যা সমাধানে উপদেষ্টাদের সঙ্গে আলোচনার আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, তিন মাস পর আমার ভাইয়েরা এখনো রাস্তায় আছে, এটাই আমার জন্য সবচেয়ে লজ্জার। এই সমস্যার সমাধান কীভাবে করা যায়, সে জন্য আমাকে একটু সময় দিন।
বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পঙ্গু হাসপাতাল পরিদর্শনে যান ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক ছাড়াও স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। ওই সময় তারা চতুর্থ তলার পুরুষ ওয়ার্ডে এক ঘণ্টারও বেশি সময় নিয়ে আহতদের দেখলেও তৃতীয় তলায় চিকিৎসাধীন অন্যদের পরিদর্শনে যাননি। এ নিয়ে তৃতীয় তলার ওয়ার্ডে থাকা আহতরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
পরবর্তীতে তারা নিচে এসে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি গাড়ি আটকে দেন। ধারণা করা হচ্ছিল সেই গাড়িটি স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম ব্যবহার করতেন। তবে পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে ওই সময় ব্রিটিশ হাইকমিশনারের গাড়িতে উঠে হাসপাতাল ত্যাগ করেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা। পরবর্তীতে বিষয়টি বুঝতে পেরে আহতরা আগের গাড়িটি ছাড়াও পুলিশের একটি প্রোটোকল গাড়ি আটকে দেন। একপর্যায়ে সুচিকিৎসার দাবিতে দুপুর সোয়া ১টার পর তারা রাস্তায় নামেন।